first published: Taramon, 2019
অনেকেই ভাবেন, রোগশোক না থাকাই ভাল স্বাস্থ্য। কিন্তু আসলে তা নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, স্বাস্থ্য মানে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ভাবে ভালো থাকা। অসুস্থ না হওয়া মানেই স্বাস্থ্য ভাল থাকা নয়। আমাদের দেশে অন্যের স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষের মাথা ঘামানো একটা সাধারণ ব্যাপার। কিছুদিন পরে যদি কারও সাথে দেখা হয়, স্বাস্থ্য নিয়ে মন্তব্য না করা পর্যন্ত সৌজন্য শেষ হয় না। ভাল আছি কি মন্দ আছি তা বলার পর অবধারিত ভাবে শুনতে হয়, আরে তোমার স্বাস্থ্য তো ভালো/খারাপ হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মানে কী? তা নিয়ে অনেকেই ঠিকমত জানিনা।
কিন্তু এই স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের যে আলোচনা, বাংলাদেশে সে আলোচনায় স্বাস্থ্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক বাদ পড়ে যায়। তা হল মানসিক স্বাস্থ্য। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, সুস্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী পরিবেশে বসবাস করা মানুষের একটি অন্যতম মানবাধিকার। এই স্বাস্থ্যের বিবেচনায় মানসিক স্বাস্থ্য সাধারণত গুরুত্ব পায় না, তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া একজন মানুষকে পরিপূর্ণভাবে সুস্থ বলা যাবে না। মানসিক স্বাস্থ্য মানে মানসিকভাবে ভালো থাকা, নিজের কাছে নিজেকে ভালো বোধ করা, নিজের আবেগ ও মনের ওপর আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকা।
দুঃখের বিষয় হল, অন্যান্য ক্ষেত্রের মত মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও লিঙ্গত্তিক বৈষম্য একটা বড় ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশের মত পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব কম দেয়া হয়। মানসিক অসুস্থতার আরেকটি বৈশিষ্ট্য, এটি সহজে চোখে পড়ে না। একজন মানুষ মানসিক ভাবে যদি ভাল না থাকেন, সেটা এমনিতেই অন্যরা লক্ষ্য করেন না। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই অমনো্যোগ আরও বেশি হয়ে থাকে। উল্টো, নারীদের যেকোন অসুস্থতা দেখা গেলে তাদের প্রতি অবহেলা, তিরস্কার, রাগারাগি, এসব আরও বেড়ে যায়।
দৈনন্দিন জীবনে নারীর মনে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা, নারীকে ক্রমাগত কারণে অকারণে গালিগালাজ করা হয়, তাচ্ছিল্য করা- এটা আমাদের সমাজে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা হয়। আমাদের দেশে নারীরা অর্থনৈতিকভাবে পরাধীন। স্বামী বা পরিবারের অন্যের ওপর নির্ভরশীল নারীরা প্রায়ই পারিবারিক কলহের শিকার হন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। অনেক ক্ষেত্রে নারীদের দিনের পর দিন এমন পরিবেশে থাকেন- এসকল ঘটনা মনের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, তখন মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় তা বিষণ্ণতাসহ অন্যান্য গুরুতর মানসিক রোগে রূপ নেয়। এ সকল অসুস্থতার প্রতিকার পাওয়া, নারীর সাথে যেন এমন আচরণের পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করা নারীর অন্যতম মানবাধিকার।
এদেশে নারী যে কেবল নিজেই মানসিক অসুস্থতার শিকার তা নয়, বরং পুরুষের মানসিক অসুস্থতার জন্য নারীকে বলি হতে হয়। আমাদের দেশে বিয়ে দিয়ে দেয়াকে সর্বরোগের অষুধ মনে করা হয়। এমন প্রায়ই হয় যে, কোন একটি ছেলে হয়ত সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্য আচরণ করে না। আশেপাশের মানুষ বলে যে, ওকে ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে দাও তাহলেই ঠিক হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নারীকে না জানিয়ে বা ভুল বুঝিয়ে বিয়েতে রাজি করানো হয়। এ সকল বিবাহের আইনগত বৈধতাও কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এ নিয়ে নারী প্রতিবাদ করলে অনেক সময় তাঁকে বলপূর্বক গর্ভধারণে বাধ্য করা হয়। এভাবেই মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে নারীর নিরাপত্তা, সমতা, অধিকারের বিষয় জড়িয়ে থাকে।
কিছু কিছু মানসিক রোগ কেবল নারীদের প্রভাবিত করে, পুরুষদের নয়। এ সম্পর্কেও আমাদের জানা উচিত। যেমন পিপিডি (Postpartum Depression) বা প্রসবপরবর্তী বিষণ্ণতা। বিশ্বব্যাপী পিপিডি একটি গুরুতর রোগ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু আমাদের দেশে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত পিপিডির নামও মানুষ শুনে নি। পিপিডি হলে নতুন মা বিষণ্ণতায় ভোগেন, তার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন না, সন্তানের প্রতি স্নেহ দেখাতে পারেন না। অনেকেই সন্তানকে এড়িয়ে চলেন, স্পর্শ করতেও অনীহা হয়। পিপিডি সম্পর্কে না জানলে নতুন মায়ের এমন আচরণ অদ্ভূত লাগতে পারে। পিপিডি আক্রান্ত মায়েদের প্রায়ই প্রচুর তিরস্কার করা হয়,তিনি একজন“খারাপ মা”। এর ফলে মা শিশুর সম্পর্কে প্রভাব পড়ে, মা নিজেকে অপরাধী ভাবা শুরু করেন।
নারীদের ক্ষেত্রে বিষন্নতা পারিবারিক নির্যাতনের একটি বড় কারণ এবং ফলাফল। দিনের পর দিন নারী নির্যাতনের শিকার হলে এমন বিষন্নতা তৈরি হয়, যে নারী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা শুরু করেন যে, এই নির্যাতন তার প্রাপ্য। নির্যাতক যেহেতু তার পরিবারের সদস্য, নারী তার ওপর নির্ভর করেন, তাই নারী নিজের অসুস্থতা, বা মন খারাপের জন্য নিজেকেই দায়ী করেন। এর ফলে তিনি কখন এই নির্যাতনের প্রতিকার খুজেন না, নির্যাতন থামানোর চেষ্টাও করেন না। চিকিৎসা বিজ্ঞানে Battered Women’s Syndrom বলে একটা লক্ষণ আছে। এ সিন্ড্রোমে ভোগা নারীরা শারীরিক মারপিটকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করতে থাকেন বলে তারা এই চক্র থেকে বের হতে পারেন না। এই বিষন্নতাকে তখন নারীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। মানসিক অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে আত্মীয়রা নারীদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে, জাল দলিলে স্বাক্ষর করায়, প্রতারণা করে। নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর না দিলে চোখের আড়ালে এই নির্যাতন চলতেই থাকে। ইউরোপ ও আমেরিকায় প্রায়ই এমন হয়েছে, যে একজন নারী যে নির্যাতনের শিকার এটা ধরা পড়েছে অন্য কোন কারণে চিকিৎসা নিতে গিয়ে। ডাক্তার হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে, নারীর দেহে এমন অনেক আঘাতের চিহ্ন যা নির্যাতন ছাড়া হতে পারে না, তখন তারা পুলিশকে খবর দেন। নারী নিজে অনেক সময় পুলিশের কাছে যেতে পারেন না, সেক্ষেত্রে ডাক্তার বড় ভূমিকা রাখেন।
কন্যা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও আমরা সচেতন নই। আমাদের দেশে অটিজম নিয়ে খুব সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে। অটিজম আছে এমন ছেলে শিশুদের জন্য অনেকে ব্যবস্থা নিলেও, বিশেষ করে গ্রামের দিকে, মেয়েদের ক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না। বরং এমন স্পেশাল শিশুদের পাগল বলে বেঁধে রাখা হয়, লুকিয়ে রাখা হয়, ডাক্তার দেখানো হয় না। এমন মেয়েদের বিপদের ঝুঁকি বেশি। আমরা হুমায়ূন আহমেদের নন্দিত নরক উপন্যাসে আমরা দেখেছি যে রাবেয়া ধর্ষনের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে যদি উপযুক্ত যত্ন করা হত, তাহলে হয়ত তার সাথে এমন অপরাধ ঘটত না।
আমাদের সমাজ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। তারপর, মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতনতা প্রয়োজনের চেয়ে কম। আসুন, এ বিষয়ে আমরা নিজেরা জানি, অপরকে জানতে সাহায্য করি, এবং সর্বোপরি, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কুসংস্কার পরিহার করি।
Tratamiento de apoyo psicológico.
Do not take more or less of it or take it more often than prescribed by your doctor.
Por último, los factores psicológicos, como la ansiedad y el estrés, están detrás del 20% de los casos de disfunción eréctil.
Finasteride belongs to a group of medicines called Type II 5-alpha reductase inhibitors.