৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, কেমব্রিজ
আমার মত যারা প্রবাস জীবনে হাঁসফাঁস করছেন বা করেছেন বা করতে যাচ্ছেন, এই লেখাটি তাদের প্রত্যেকের জন্য ।
দীর্ঘ দিনের জন্য প্রবাসে আসা আমার জীবনে এটাই প্রথম ছিল। দেশ ছাড়বার আগে খুশি ছিলাম এই ভেবে যে অনেক দিনের একটা স্বপ্ন সত্য হতে যাচ্ছেঃ একা একা জীবন চালিয়ে নেবার স্বপ্ন। জানিনা কবে থেকে, কিন্তু বেশ কচি একটা বয়স থেকেই স্বপ্নটা মনের ভেতরে একটু একটু করে বেড়েছে যে একদিন আমি দেশের বাইরে নিজের একটা জীবন গড়ব। আসার আগে তুমুল ব্যস্ততা, জার অনেকটাই এখন মনে হয় অপ্রয়োজনীয় ছিল, সেই ব্যস্ততা আমাকে কোন কিছু নিয়ে চুপচাপ বসে চিন্তা করবার অবকাশ তখন দেয়নি।
আমেরিকায় আসা নিয়ে আমার কোন উচ্ছ্বাস ছিলনা। এ দেশ্ টা আমার কখনই পছন্দের ছিল না বড় একটা। যাই হোক, এখানে আসার পরপর-ই আবার ঝাঁপিয়ে পড়লাম পড়া লেখায়। সারা দিন ক্লাস, ক্লাস শেষে লাইব্রেরিতে পড়া। এক মাস ভাল কাটল। দ্বিতীয় মাসের মাঝ থেকে হঠাত লক্ষ্য করলাম যে একটা অবসন্নতা চেপে বসছে নিজের মাঝে। কাজে আনন্দ পাচ্ছিনা, যে কোর্স গুলো বেছে নিয়েছি সেগুল পছন্দ হচ্ছে না, সকালে ঘুম ভেঙ্গেই একরাশ বিরক্তি চেপে ধরে। সবকিছু বিরক্ত লাগে। তার মধ্যেই আমার ল্যাপটপ এ গোলমাল দেখা দিল। নতুন জায়গা কাউকে চিনিনা, কিছু চিনিনা, তার মধ্যে কম্পিউতার নিয়ে দৌড়াদৌড়ি চলল।
এর ফাঁকে ফাঁকে ছিল এখানকার কিছু বাঙালি ছাত্রের সাথে মাঝে মাঝে আড্ডা দেয়া। টাফটস, হার্ভার্ড ইকনমিক্স এর ২জন আপু ভাইয়া, আর কেনেডি স্কুলের দেবব্রতদা।পৃথিবী টাকে লাথি মারতে ইচ্ছে করল।চোখের সামনে দেখি আমার ক্লাসমেটরা হই হই করে পার্টি করছে, খেতে যাচ্ছে, ঘুরতে যাচ্ছে, শপিং করছে। এতসবের মধ্যে আমি নেই। আমি ক্লাস আর লাইব্রেরি ছাড়া কোথাও যাই না, কিছু দেখিও না।
সেমেস্টার এর শেষে সব চূড়ান্ত হলঃ পড়ার চাপ, মেজাজ খারাপ, ক্লান্তিঃ সবি চূড়ান্ত রকমের খারাপ। প্রবাসের জীবন এত অপছন্দের হবে ছাই তা তো আগে বুঝি নি!
পরীক্ষা শেষ হলে পর ৩ মাসে প্রথম আমি হার্ভার্ড স্কয়ারে হেঁটে হেঁটে সব ঘুরলামঃ শোরুম, দোকান দেখলাম, মানুষ দেখলাম, কি কি সাজান আছে দেখলাম। পরের সন্ধ্যায় গেলাম দাদার সাথে বোস্টন শহরেঃ উদ্দেশ্য বড়দিনের সাজ দেখব। রাতে খেয়েদেয়ে ফিরলাম। তার পরের হফতায় গেলাম চায়নাটওনে। তার পরের উইকেন্ড এ একসাথে আবার খাওয়া।
দ্বিতীয় সেমেস্টার শুরু করলাম দক্ষিন আফ্রিকায়। ক্লাসরুমে না, অফিসে। প্রতিদিন কলিগদের সাথে দেখা হত, গবেষণার ফাঁকে ফাঁকে গল্পগুজব চলত, বিকের হলে আমি একাই এদিক সেদিক ঘুরতে যেতাম। ওখানে রাঁধতাম কম, মাঝে মাঝেই টুকিটাকি খাবার কিনে খেতাম। আফ্রিকার আবহাওয়া আমার ভারি পছন্দ হয়েছিলঃ পুর দেশের মত। তার চেয়েও পছন্দ হয়েছে ওখানকার মানুষদের। কিন্তু সে গল্প আরেকদিনের জন্য তুলে রাখি।
সেমেস্টার শেষে আমেরিকায় ফিরতে মন চাইছিল না। মনের মাঝে ঘাপ্টি মারা ভয়ঃ আবার অই বিরক্তিকর জীবনটাতে ফিরতে হবে! উফফফ…ফিরলাম। আর মধ্যে আরও বাঙালি এক ছাত্রের সাথে পরিচয় হল। এসেই দেখা করলাম দাদার সাথে। মাসের বাজার করলাম একসাথে। বিকালে আমি একা একা হাঁটলাম। এবার এক ল ফার্মের সাথে রেফিউজিদের নিয়ে কাজ করছি। প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন অফিস করি। প্রতিদিন হার্ভার্ড এর বাইরে যাওয়া হয়ঃ নতুন মানুষ দেখি, ট্রাফিক জ্যাম দেখি, গাদাগাদি করে ট্রেনে চেপে ঘরে ফিরি।
এবার ২টা ক্লাস করছি ল স্কুলের বাইরেঃ ২ দিন পর পর অন্য কাম্পআস এ ক্লাস করি, নতুন মানুষ দেখি, নতুন ধরনের বই পড়ি, আইনের কচকচানি থেকে এ এক িবশাল নিস্তার!
গতকাল অফিস শেষে ঘরে ফিরছিলামঃ হথাত খেয়াল করলামঃ আমি আবার যাতায়াতের সময় ইয়ারফোন গুঁজে গান শুনছি, আবার চিন্তা করা শুরু করেছি, আবার কল্পনার জাল বুনছি। আবার নিজের মনে হাসছি।
অবাক হলাম।
তারপর বুঝলাম।
আমি শহরের মেয়ে। হট্টগোলে বড় হয়েছি। হৈচৈ করে বড় হয়েছি। সেই আমি ক্লাস ঘর ঘর ক্লাস করব, এই তো গোঁড়াতেই ভুল।
নতুন দেশে পড়তে আসা মানে শুধুই পড়া নয়। নিজেকে সময় দিতে হয়ঃ আশপাশটাকে চিনতে হয়, ঘুরতে যেতে হয়, যে আমি প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যায় গল্প করতাম সে আমি এখানে দিনের পর দিন ঘাড় গুঁজে পড়লে বাচব কেন! কেন আমি ৩ মাস পর বোস্টন গেলাম? কেন আমি ৩ মাস পর বাইরে খেলাম? কেন আমি ফ্রাইডে নাইটগুলো একা থাকতাম?
বেচে থাকলে নিঃশ্বাস নিতে হয়। নতুন জায়গায় গিএ সেখানেও নিজের জন্য কিছু জানালা তৈরি করতে হয়ঃ মানুষ চিনতে হয়, বাতাস চিনতে হয়, গন্ধ চিনতে হয়, সবচেয়ে জরুরিঃ কোন ঘুপচি গলিতে কোন খাবারের দোকান আছে সেটা চিনে রাখতে হয়। এই খাবারের দোকান, এই পাতাল রেলের গুলিস্তান মার্কা ভিড়, এই অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি, সুফিযম এর ক্লাস করা, ইতিহাস বই-এর পাতা উলটানোঃ হ্যাঁ, এখন আমি জানি, আমি প্রবাসে নিজের একটা জীবন গড়েছি। ৫ মাস সময় লেগেছে। আগে জানলে ২ মাসেই করতাম।কিন্তু না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়া ভালো।
বিঃ দ্রঃ আমার এই কঠিন দিনগুলোতে খুব হাতে গোণা কিছু মানুষ আমার সাথে ছিল।
তুমি (শ্রাবণী আপু) ছিলে বলে আমি দিনগুলো পার করতে পেরেছি। তুমিও পারবে এখন।
আপনি (সায়েম ভাই) ছিলেন তাই মাঝে মাঝে ভুল করে হেসেছি।
তুই (প্রবীর) ব্যাটা আরেকটু বেশি খোঁজ নিতি। জজ হলেই বুঝি ভাব নিতে হয়?
আপনাকে (মাসুম ভাই) কি আর বলব। বড় হন, । কোথায় আমাকে সামলাবেন…
আর তুমি (শুভ) ছিলে, বিশ্বাস করি থাকবে। সবসময়।
তোমাকে (রোকেয়া আপু) থাঙ্কু দেবনা। আমরা তো দুজন দুজনের জন্য ছিলাম হেহেহেহে…
En algunos casos, puede causar un problema de pareja serio en nuestras relaciones.
Take cephalexin exactly as directed.
Sin embargo, es necesario hablar de esta patología para desmitificarla ya que, además, suele tener solución.
Finasteride works by blocking androgens, which are a group of hormones that play a role in male traits and reproductive activity.